আসছালামু আলাইকুম সম্মানিত পাঠকবৃন্দ সবাইকে আমাদের ওয়েবসাইটে স্বাগতম। প্রিয় পাঠকবৃন্দ আসা করি সবাই আল্লাহর রহমতে ভালো আছেন। বন্ধুরা বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস ১৭ ই মার্চ ২০২৩ উপলক্ষে ভিবিন্ন প্রতিযোগিতা ও বিভিন্ন পরীক্ষায় জাতীয় শিশু দিবস রচনা PDF – বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস রচনা-১৭ ই মার্চ জাতীয় শিশু দিবস রচনা ২০২৩ এসে থাকে। তাই আজকে আমরা জাতীয় শিশু দিবস রচনা তোমাদের মাঝে শেয়ার করতেছি। আসা করি তোমাদের উপকারে আসবে।
- জাতীয় শিশু দিবস রচনা PDF
- বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস রচনা
- ১৭ ই মার্চ জাতীয় শিশু দিবস রচনা ২০২৩
- ভূমিকা :
- বিশ্ব শিশু দিবস কী? :
- শিশু দিবসের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি :
- শিশু দিবসের তাৎপর্য :
- শিশু সনদ :
- শিশুরা জাতির ভবিষ্যৎ :
- শিশুদের প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্য :
- বিশ্বে শিশুদের অবস্থান :
- বাংলাদেশে শিশুদের বর্তমান অবস্থা :
- উপসংহার :
জাতীয় শিশু দিবস রচনা PDF
বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস রচনা
১৭ ই মার্চ জাতীয় শিশু দিবস রচনা ২০২৩
ভূমিকা :
আজ যে শিশু
পৃথিবীর আলোয় এসেছে
আমরা তার তরে
প্রবীণ শিল্পীদের দরদভরা কণ্ঠে গান হয়ে একটা বিষয়েই আর্তি জানায়- শিশুর অধিকার কী? শিশুর অধিকার যেন আজ সবার মাঝে সোচ্চার কণ্ঠে ধ্বনিত-প্রতিধ্বনিত হচ্ছে। আজকে যে শিশুটি জন্ম নিল একদিন সেই তো বড় হয়ে নামকরা সাহিত্যিক, স্বনামধন্য ডাক্তার, খ্যাতিমান শিল্পী বা বিশ্বখ্যাত বিজ্ঞানী হবে। কিন্তু কী দেখছি আমরা? তৃতীয় বিশ্বের শিশুদের দিকে তাকালে তাদের নানা করুণচিত্র আমাদের চোখের সামনে ভেসে ওঠে। তারা ক্ষুধায় পায় না অন্ন, চিকিৎসার জন্য পায় না ওষুধ। শুধু তাই নয়- বাসস্থান ও শিক্ষার মতো মৌলিক অধিকারগুলো থেকেও তারা বঞ্চিত। এসব শিশুর কতজন কলে- কারখানায়, ক্ষেতে-খামারে শ্রমিকের কাজ করে, কতজন টোকাই, কতজন ক্ষুধা-অপুষ্টি আর রোগের কবলে পড়ে অকালে পৃথিবী থেকে বিদায় নেয়, কে রাখে তাদের খবর?
বিশ্ব শিশু দিবস কী? :
জাতিসংঘ ১৯৫৪ সালে এ দিবসটি পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। প্রতিবছর অক্টোবর মাসের প্রথম সোমবার ‘বিশ্ব শিশু দিবস’ পালন করা হয়ে থাকে। বাংলাদেশে ১৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম দিনটিকেই ‘শিশু দিবস’ হিসেবে পালিত হয়। এ দিবস পালনের উদ্দেশ্য হল শিশু-কিশোরদের সঠিকভাবে গড়ে তুলতে হবে ও তাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের পথনির্দেশ দিতে হবে।
শিশু দিবসের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি :
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বিভীষিকাময় ও বেদনাদায়ক স্মৃতি এ দিবসটির জন্ম দেয়। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে এশিয়া, আফ্রিকা ও ইউরোপে শত শত ফুলের মত নিষ্পাপ শিশু যারা যায়। অনেক বড় শহর ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। হাজার হাজার শিশু অসহায় ও পিতৃমাতৃহীন হয়ে পড়ে। পঙ্গু ও বিকলঙ্গ হয় অনেকে। জাতিসংঘ কল্যাণ তহবিল (UNICEF) এই অসহায় শিশুদের কল্যাণ ও নিরাপত্তা বিধানে এগিয়ে আসে এবং বিশ্ববাসীর মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে একটি দিবস পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এ দিন সমগ্রিক আলোচনার মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শিশুদের সমস্যাবলি বিশ্ব ফোরাম তুলে ধরে এবং সমাধানের পথ খুঁজে বের করে। তাই জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ১৯৫৪ সালে বিশ্বব্যাপী দিবসটি পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।
শিশু দিবসের তাৎপর্য :
বিশ্ব শিশু দিবসের তাৎপর্য গভীর ও ব্যাপক। তাই জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যেই সারা বিশ্বে অক্টোবর মাসে প্রথম সোমবার পালিত হয় ‘বিশ্ব শিশু দিবস’। এই দিবসটি পালনের উদ্দেশ্য হচ্ছে শিশুদের কল্যাণ-সাধন এবং তাদের নানাবিধ সমস্যার সুষ্ঠু সমাধান করে তাদের মৌলিক অধিকার আদায় করা। কিন্তু পরিতাপের বিষয়, বিশ্বের অধিকাংশ মানুষ এখনও ‘বিশ্ব শিশু দিবস’ সম্পর্কে সচেতন নয়। এর জন্যে এ দিবসটির কর্মসূচি এমনভাবে করতে হবে যেন জনগণ এর তাৎপর্য গভীরভাবে অনুধাবন করতে পারে। কেবলমাত্র কাগজে-কলমে শিশুদের অধিকারের কথা লিখে সুফল পাওয়া সম্ভব নয়। তাই বাস্তবে এর রূপ দিতে হবে। এর জন্যে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে আসতে হবে, এগিয়ে আসতে হবে আমাদের সবার। তৃতীয় বিশ্বের সন্তানদের দিকে তাকালে একটা বিষয়ই ধরা পড়ে বিশ্ব শিশু দিবস, শিশু সনদ ইত্যাদি যেন আমাদের সন্তানদের জন্যই করা হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে এর প্রয়োগ কতটুকু তা ভাববার বিষয় ।
শিশু সনদ :
শিশুরা জাতির ভবিষ্যৎ :
আজকের শিশু আগামীদিনে দেশ ও জাতির ভবিষ্যৎ কর্ণধার। একটি নবজাত শিশুর মধ্যে আজ যে প্রাণের সঞ্চার হল তা একদিন ফুলে ফলে প্রস্ফুটিত হবে। বড় হয়ে একদিন সে জাতির আশা-আকাঙ্ক্ষা ও ভবিষ্যৎ স্বপ্ন সফল করবে। Wordsworth-এর ভাষায়- ‘Child is the father of a nation’. বস্তুত শিশুর মধ্যে নিহিত রয়েছে বিপুল সম্ভাবনা। কারণ, শিশুই একদিন বড় হয়ে দেশ ও সমাজের দায়িত্ব গ্রহণ করবে। তারা হবে দেশের আদর্শ নাগরিক। এ জন্য চাই শিশুর সযত্ন প্রতিপালন; বিকাশ সাধনের সুষ্ঠু পরিবেশ। শিশুদেরকে আদর, সোহাগ, যত্ন ও সুশিক্ষা দিয়ে করে তোলার জন্য চাই অনুকূল পরিবেশ, উপযুক্ত শিক্ষা। উপযুক্ত অভিভাবক পেলে একটি শিশু আদর্শ মানুষরূপে বড় হয়ে উঠতে পারে। শিশু যন ফুলের মতো পবিত্র, সরল। সে যে পরিবেশে থাকে সে তার পারিপার্শ্বিক আচার-আচরণ অনুকরণ করে এবং তাতে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে। একটি নির্মল ফুলের মতো বিড় পবিত্র শিশু খারাপ পরিবেশ ও উপযুক্ত শিক্ষার অভাবে, কুরুচিপূর্ণ পরিবেশ, অসৎসঙ্গ ও বিবেচনাহীন অভিভাবকের অধীনে বড় হয়ে অমানুষ, বিবেকহীন ও লম্পট চরিত্রের হতে পারে।
সম্ভাবনাময় আগামী দিনের এক সুনাগরিক এভাবেই অঙ্কুরেই বিনষ্ট হয়ে যেতে পারে। পক্ষান্তরে সুশিক্ষা, সুরুচি, শিক্ষিত বিবেকবান অভিভাবক একটি শিশুর অন্তর সুপ্ত ভবিষ্যতের পিতাকে জাগিয়ে তুলতে পারে। এর ফলে জাতি পেতে পারে একজন আদর্শ চরিত্রবান নাগরিক, যার দ্বারা দেশ ও সমাজ সঠিক পথে চালিত হতে পারে। আর উন্নত চরিত্র, মহান মানুষের সমবায়েই একটি মহৎ জাতি গড়ে ওঠে। যেহেতু শিশুর মধ্যে জাতির উন্নতি ও সমৃদ্ধির বীজ লুক্কায়িত থাকে, তাই শিশুর সযত্ন প্রতিপালন, সুশিক্ষা ও চরিত্র গঠনে প্রত্যেক অভিভাবককে দায়িত্ব নিতে হবে এবং এ ক্ষেত্রে জাতীয় পর্যায়েও উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন।
শিশুদের প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্য :
বিশ্বের মোট জনসংখ্যার শতকরা ২৫ ভাগই শিশু। এটা পরম সত্য যে, শিশুরাই জাতির ভবিষ্যৎ এবং আগামী দিনের রাষ্ট্রনায়ক। তারাই একদিন সুনাগরিক হয়ে দেশের নেতৃত্ব দেবে। তাই তারা অবহেলিত থাকলে ভবিষ্যাৎ প্রজন্ম মুখ থুবড়ে পড়বে। এহেন ভয়াবহ অবস্থার কবল থেকে মুক্তি লাভের জন্য বিশ্বের প্রতিটি দেশই শিশু সমাজকে নিয়ে চিন্তা-ভাবনা শুরু করেছে- কী করে এদেরকে সুন্দর করে গড়ে তোলা যায়, কীভাবে এদের সমাজে প্রতিষ্ঠিত করা যায়। সুন্দর মানব- সমাজ গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে শিশুকে গড়তে হবে। কারণ, শিশুর প্রতি অযত্ন অবহেলা কোনো | বিবেকবান মানুষেরই কাম্য নয় ।
বিশ্বে শিশুদের অবস্থান :
বাংলাদেশে শিশুদের বর্তমান অবস্থা :
জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদের ধারাগুলো সবদেশ মেনে নিলেও বিশ্বের উন্নয়নশীল গরিব দেশগুলো অর্থনৈতিক কারণে ধারাগুলো পুরোপুরি কার্যকর করতে পারছে না। বাংলাদেশে বর্তমান প্রায় পাঁচ কোটি শিশু-কিশোর রয়েছে। এদের জন্য খাদ্য, বস্ত্র, স্বাস্থ্য, বাসস্থান ও শিক্ষার মতো মৌলিক অধিকারগুলো দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। শুধু বাংলাদেশেই নয়, ভারত, নেপাল, বার্মা, মালয়েশিয়া, শ্রীলংকা ইত্যাদি কোনো দেশেই শিশু অধিকার সনদ পুরোপুরি কার্যকর করা সম্ভব হয় নি। এর মূল কারণ হচ্ছে দারিদ্র্য, অর্থনৈতিক সংকট ও জনসংখ্যা বৃদ্ধি। তবে চরম হতাশার মধ্যেও আশার কথা এই যে, ইতোমধ্যেই বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দ্বারা কলে-কারখানায় ও রাস্তাঘাটে কর্মরত শিশু শ্রমিকের শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাছাড়া শিশু একাডেমী গড়ে তোলা হয়েছে। কচিকাঁচার আসর, ফুলকুঁড়ি, শাপলা-শালুক, খেলাঘর, কাঁচি-কণ্ঠ ইত্যাদি অনেক শিশু সংগঠন তৈরি করা হয়েছে। শিশু, নবারুণ, সবুজ পাতা- এসব শিশুপত্রিকা নিয়মিত বের হচ্ছে। তাছাড়া জাতীয় প্রচারমাধ্যমেও বিভিন্ন আঙ্গিকের অনুষ্ঠানমালা প্রচার করা হয়। যেমন – অঙ্কুর, নতুন কুঁড়ি ইত্যাদি ।
উপসংহার :
মহাসমারোহে প্রতিবছর ‘বিশ্ব শিশু দিবস’ পালিত হয়। কিন্তু বাস্তবে এর প্রয়োগ কতটুকু? এর জন্য সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। আর একটি সুষমামণ্ডিত নির্মল পৃথিবী গড়ে তুলতে হবে। আমাদের ভবিষ্যৎ বংশধরদের জন্য। বিশ্ব শিশু দিবসে আমরা যেন সবাই বলতে পারি-
‘প্রাণপণে পৃথিবীর সরাব জঞ্জাল এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।’
Tag:জাতীয় শিশু দিবস রচনা PDF [ ১০০০,৫০০,৮০০ শব্দ],বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস রচনা,১৭ ই মার্চ জাতীয় শিশু দিবস রচনা ২০২৩